Ticker

100/recent/ticker-posts

Translate

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও পদমর্যাদা এবং কার্যাবলী আলোচনা কর!

 ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও পদমর্যাদা এবং কার্যাবলী আলোচনা কর! ১×৮=৮



ভূমিকা:- ভারতীয় সংসদীয় শাসনব্যবস্থার প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শাসন ব্যবস্থায় প্রধান রাষ্ট্রপতি হলেও প্রকৃত মত ভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। লোকসভার সংখ্যা গরিষ্ঠ দলের নেতা বা নেত্রীকে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ করে থাকেন (৭৫-১ নং ধারা) লোকসভার কোন দল একক সংখ্যা গরিষ্ঠ দাতা অর্জন করতে না পারলে রাষ্ট্রপতি নিজের মনোনীত ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন,  তবে প্রধানমন্ত্রীকে লোকসভা বা রাজ্যসভার সদস্য হতে হয়। প্রধানমন্ত্রী কার্যকালের মেয়াদ পাঁচ বছর। তো মনে প্রধানমন্ত্রী প্রতি মাসে 50 হাজার টাকার বেতন এবং বিভিন্ন ভাতাবাবধ ১১০০০০  টাকা  বেতন পান। আর তিনি অন্যান্য সুযোগ সুবিধা লাভ করেন।

ক্ষমতা ও পদমর্যাদা এবং কার্যাবলী:- প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও পদমর্যাদা গুলি হল নিম্নরূপ :-

১. লোকসভার নেতা বা নেত্রী:- লোকসভার নেতা বা নেত্রী হলেন প্রধানমন্ত্রী। লোকসভার অধিবেশন কখন ডাকা হবে, কত দিন চলবে, কোন বিষয়ে আলোচনা হবে ,ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকারী প্রধানমন্ত্রী। গুরুত্বপূর্ণ যে কোন বিল পাস করানোর দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হয়। সরকারের প্রধান মূখ্য পাত্র হিসেবে তিনি লোকসভায় সরকারি নীতি সমূহের ব্যাখ্যা প্রদান করেন।

২. মন্ত্রিসভার গঠন সংক্রান্ত ক্ষমতা:- সংবিধানের নির্দেশ অনুসারে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ অনুযায়ী মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়োগ করে থাকেন।

৩. ক্যাবিনেটের নেতা:- প্রধানমন্ত্রী সমর মর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে অগ্রগণ্য। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি কেবিনেটের মন্ত্রীদের নিয়োগ করেন, দপ্তর বন্টন করেন ও পদচুত্য করতে পারেন। তিনি ক্যাবিনেটের সভায় সভাপতিত্ব করেন। তার নির্দেশই সভার যাবতীয় কাজকর্ম নির্ধারিত হয়। ক্যাবিনেটের বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে সংহতি রক্ষা করা প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

৪. আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভূমিকা:- ভারতের রাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্মেলন তিনি ভারতের প্রধান প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত থাকেন। ভারতীয় পক্ষ থেকে বিদেশী রাষ্ট্রপ্রধানদের স্বতন্ত্র জানান এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

৫. নিয়োগ সংক্রান্ত ক্ষমতা:- প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ অনুসারে রাষ্ট্রপতি ভারতের একটি জনবহুল সভা হিসেবে নিয়ামক, নির্বাচন কমিশনার, কেন্দ্রীয় জল পালনকৃতত্ত্ব কমিশন, প্রভূতি সদস্যদের নিয়োগ করেন এমনকি বিভিন্ন রাজ্যপাল সুপ্রিম কোর্টের নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ ভূমিকা থাকে।

৬. লোকসভার সংখ্যা গরিষ্ঠ দলের নেতা:- লোকসভার সংখ্যা গরিষ্ঠ দলের নেতা বা নেত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে পার্লামেন্টের ভিতরে ও বাইরের দলের ঐক্য ও সংহতি রক্ষা করতে হয়। দলের মধ্যে কোন বিরোধ দেখা দিলে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তিনি সেই বিরোধের নিষ্পত্তি করেন।

৭. রাষ্ট্রপতির প্রধান পরামর্শদাতা:- প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রিসভার মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারের ভূমিকা পালন করে। মন্ত্রিসভার যাবতীয় সিদ্ধান্ত, শাসন সংক্রান্ত বিষয় এবং আইন প্রণয়নের জন্য মন্ত্রিসভার গৃহীত কোন প্রস্তাব সম্পর্কে রাষ্ট্রপতি জানাতে চাইলে সেই বিষয়ে তাকে অবহিত করা প্রধানমন্ত্রীর কর্তব্য। বাস্তবে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ক্রমেই যাবতীয় কার্যসম্পাদন করেন।

৮. জাতির নেতা:- সমগ্র জাতির নেতা বা নেত্রী হলেন প্রধানমন্ত্রী। রাজনৈতিক অর্থনৈতিক প্রগতি ব্যাপারে কোনরকম বা সমস্যার সৃষ্টি হলে তিনি সভা-সমিতির মাধ্যমে জনগণের কাছে উপস্থিত হয়ে সেগুলি সমাধানের উপায় সম্পর্কে সরকার মতামত প্রকাশ করে জনগণকে তা সশস্ত্র করেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যাবলী:- ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কার্যাবলী গুলি হল

১. মন্ত্রী পরিষদের সদস্যের নাম মনোনীত করা:- ভারতের যেসব মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের নাম রয়েছে সেসব নাম গুলি মনোনীত করা প্রধানমন্ত্রী একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

২. মন্ত্রীদের দপ্তর বন্টন করা:- প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুসারে রাষ্ট্রপতি ও অন্যান্য মন্ত্রীদের মধ্যে দপ্তর বন্টন করেন।

৩. ক্যাবিনেট কমিটির চেয়ারম্যান:- রাষ্ট্রপতির প্রধান উপদেষ্টা ও ক্যাবিনেট কমিটির চেয়ারম্যান হলেন প্রধানমন্ত্রী।

৪. দেশের নেতা বা নেত্রী:- প্রধানমন্ত্রী হলেন দেশের নেতা। সংসদের সরকারের সমস্ত নীতির মুখোপাত্র হলেন প্রধানমন্ত্রী। 

৫. মুখ্য সমন্বয়কারী:- প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন মন্ত্রীদের নীতি মুখ্য সমন্বয়কারী। দুই মন্ত্রকের মধ্যে দ্বন্দ্বের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মীমাংসা হিসাবে কাজ করেন। এই বিষয়ে বিশেষ ভাবে ভূমিকা পালন করে প্রধানমন্ত্রী।

উপসংহার:- তবে একথা সত্য যে প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য মন্ত্রীর অপেক্ষা স্বতন্ত্র ক্ষমতা ও পদমর্যাদার অধিকারী। তবেই প্রধানমন্ত্রী সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ মুক্ত থেকে নিজের ইচ্ছামত কাজ করতে পারেন না। জনমতের গতিপ্রকৃতির দিকে সতর্কতা দৃষ্টি দেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে এবং শাসন কার্যাদি পরিচালনা করতে হয়।

PDF Download Link:- Click here

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ