Ticker

100/recent/ticker-posts

Translate

পদ কাকে বলে? পদ কয় প্রকার ও কি কি? উদাহরণসহ বিস্তারিত আলোচনা।

  পদ কাকে বলে? পদ কয় প্রকার ও কি কি? উদাহরণসহ বিস্তারিত আলোচনা।



এক একটি ফুল পরপর গেঁথে মালা তৈরি হয়। ঠিক তেমনি কয়েকটি শব্দ পরপর বসিয়ে আমরা বাক্য রচনা করি এবং বাক্যের মধ্য দিয়ে আমাদের মনের কথা বা ভাব প্রকাশ করি। নীচে এই রকম কয়েকটি বাক্য। দেওয়া হল, মনোযোগ দিয়ে লক্ষ করো। “বর্ষাকাল যদিও আমাদের পক্ষে খুব প্রয়োজনীয়, তবু এই ঋতুতে অনেক অসুবিধাও হয়। কলকাতায় বেশি।

বৃষ্টি হলে রাস্তায় জল জমে। ফলে যানবাহন এবং লোকজনের যাতায়াতে খুব অসুবিধা হয়।” বাক্যগুলির প্রতিটিতে কয়েকটি করে ছোটো অংশ রয়েছে, এই ছোটো ছোটো অংশকে বলা হয় পদ।
সংজ্ঞা: বাক্যের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এক-একটি অর্থযুক্ত অংশকে পদ বলে।)
অথবা
 পদগুলি বাক্যে বিভক্তি বা কয়েকটি চিহ্ন যুক্ত হয়ে ব্যবহৃত হয় বলে বিভক্তিযুক্ত শব্দকেও পদ বলে।
পদ পাঁচ প্রকার। যথা (৫) বিশেষ্য, (৩) বিশেষণ, (2) সর্বনাম, (৪) ক্রিয়া এবং (৫), অব্যয়।

পদগুলির কোনোটিকে আগে, কোনোটিকে পরে সাজিয়ে এক-একটি বাক্য গঠন করা হয়েছে। এলোমেলোভাবে সাজালে বাক্য হবে না, কেননা তাতে মনের ভাব প্রকাশ পাবে না। ভালোভাবে লক্ষ করলে দেখা যাবে, এক্ষেত্রে সব পদ এক জাতীয় নয়। যেমন বর্ষাকাল, ঋতু, কলকাতা, বৃষ্টি, রাস্তা, জল, যানবাহন, লোকজন ইত্যাদি পদ বস্তু বা ব্যক্তির নাম বা পরিচয় বোঝাচ্ছে। এ-জাতীয় পদকে বলে বিশেষ্য। গাছ, ফুল, পাখি, হিংসা, দয়া ইত্যাদি যে-কোনো নামই বিশেষা।
বাক্যগুলিতে বিশেষ্য ছাড়া অন্য জাতীয় পদও আছে। যেমন, ‘প্রয়োজনীয়’ পদটি বর্ষাকাল কেমন সে সম্পর্কে বলছে। এ জাতীয় পদকে বলে বিশেষণ। ‘অনেক’, ‘বেশি’, ‘খুব’, এই পদগুলিও বিশেষণ। “আমাদের” পদটি লোকজনের নামের পরিবর্তে অর্থাৎ বিশেষ্যের পরিবর্তে  বসেছে। এটি হল সর্বনাম পদ । “জমে’ পদটি একটি কাজ বোঝাচ্ছে। এই জাতীয় পদকে ক্রিয়া বলে।
'এবং' পদটি যানবাহন ও লোকজন এই দুটি পদকে যুক্ত করছে। এ-রকম পদকে বলে অব্যয়।


বিশেষ্য
যে পদ কোন কিছুর নাম বোঝায়, তাকে বিশেষ্য পদ বলে।
বিশেষ্য পদ কে নানা শ্রেণিতে ভাগ করা যায়।
১) জাতিবাচক বিশেষ্য:- (একটি শ্রেণির বা প্রকারের সবকিছু বা সকলকে বোঝাবার জন্য যে নাম ব্যবহার করা হয়, তাকে জাতিবাচক বিশেষ্য বলে।যেমন:- হিন্দু, মুসলমান, বাঘ ইত্যাদি)
২) বস্তুবাচক বিশেষ্য :- কোন বস্তুর নামকে বস্তুবাচক বিশেষ্য বলা হয়। কাগজ, টেবিল ইত্যাদি বস্তুবাচক বিশেষ্য।
) সংজ্ঞা বাচক বিশেষ্য :- কোনো নির্দিষ্ট বস্তু বা প্রাণীর নামকে সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য বলে। মুম্বাই, শ্যামল, বীণা ইত্যাদি।
৪) সমষ্টিবাচক বিশেষ্য :- যে নাম বস্তু বা প্রানীর সমষ্টিকে বোঝায়, তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন —জনতা, ভিড়, দল, বাহিনী, জনসাধারণ, শ্রেণি, ঝাঁক ইত্যাদি।
৫)গুণবাচক বিশেষ্য : প্রাণী বা বস্তুর গুণ, দোষ বা অবস্থা বোঝাবার জন্যে যেসব নাম ব্যবহৃত হয়, সেগুলিকে গুণবাচক বিশেষ্য বলে। যথা—দয়া, মায়া, ভদ্রতা, কঠিনতা, শীতলতা ইত্যাদি।)
৬) ক্রিয়া বাচক বিশেষ্য :- যেসব শব্দের দ্বারা কাজের নাম বোঝায়, সেগুলিকে ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য বলে। যথা---দেখা, খাওয়া, গমন, ভোজন, ভ্রমণ, দর্শন, মরণ, বাঁচন, পড়ানো ইত্যাদি।
বিশেষন
 এ যে পন অন্য পদ সম্পর্কে বিশেষভাবে আরো কিছু জানায়, তাকে বিশেষণ বলে।
বিশেষ্যের বিশেষণের শ্রেণি
১ গুনবাচক বিশেষ্যের বিশেষণ :- এসব বিশেষণ বিশেষ্যের গুণ, দোষ, অবস্থা ইত্যাদি বোঝায়। যথা—সত লোক, বিরাট দেশ, প্রাচীন সভ্যতা।
(২) পরিমাণ বিশেষ্যের বিশেষণ:- এ জাতীয় বিশেষণ বিশেষ্যের পরিমাণ বোঝায়। যথা—অল্প বয়স, প্রচুর গুণ, পূর্ণ অংশ, অর্ধেক আপেল।
৩) সংখ্যাবাচক বিশেষ্যের বিশেষণ:- এই শ্রেণির বিশেষণ বিশেষ্যের সংখ্যা বোঝায়। যথা— চারটি ফল, তিন বন্ধু, পাঁচ খানি বই, ছন ঋতু।
(৪) পূরণবাচক বিশেষ্যের বিশেষণ:- এইসব বিশেষণ বিশেষ্য পদটি তালিকায় কী স্থান অধিকার করে আছে তা বোঝায়। যথা— তৃতীয় ব্যক্তি, প্রথম স্থান, ষষ্ঠ পর্ব।
৫) ক্রিয়াজাত বিশেষ্যের বিশেষণ:- এইসব বিশেষণ ক্রিয়াপদ থেকে অথবা ক্রিয়ার মূল ধাতু থেকে গঠিত হয়। যথা- রং-দেওয়া জানালা, ফুটন্ত ফুল, চলন্ত গাড়ি, ঘোরানো সিঁড়ি।
) সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্যের বিশেষণ:- এই শ্রেণির বিশেষণ বিশেষ্য থেকে গঠিত হয়। যথা—ভারতীয় সভ্যতা, ইউরোপীয় আক্রমণ, জাপানি চিত্রকলা, মাদ্রাজি খাবার।
(৭) প্রশ্নবোধক বিশেষের বিশেষ্য :- কি, কী, কোন, কার, কাহার ইত্যাদি পদ যখন প্রশ্ন বোঝাবার জন্য বিশেষ্যের সঙ্গে ব্যবহৃত হয়, তখন সেগুলিকে প্রশ্নবোধক বিশেষ্যের বিশেষণ বলে। যথা—কী কথা বলবে? কোন দিকে যাবে। কার বই নিয়ে যাচ্ছ?
(৮) সর্বনামীয় বিশেষ্যের বা নির্দেশত বিশেষ্যের বিশেষণ : যে সব পদ বিশেষ প্রাণী বা বস্তুর প্রতি নির্দেশ করে, সেগুলিকে নির্দেশক বিশেষণ বলা হয়। যথা—ওই লোকটি, এই বইটি। ‘ওই’, ‘এই’ ইত্যাদি পদ সর্বনাম।
(৯) ভাববোধক বিশেষ্যের বিশেষণ :- মনের প্রবল ভাব বা আবেগ বোঝাবার জন্য বিশেষ্যের সঙ্গে ব্যবহৃত হলে ‘কী’ পদটিকে ভাববোধক বিশেষণ বলা হয়। যথা—কী বিপদে পড়িলাম ! কি যন্ত্রণা।
সর্বনাম
সজন আমার বন্ধু। সজন্ গতকাল সজনার মামাবাড়ি থেকে ফিরেছে। সুপ্রিয় বলেছে সজনার মামা একজন কবি। উপরের বাক্যগুলিতে বারে বারে সজনার নাম উচ্চারণ করায় শুনতে খারাপ লাগছে। তার চেয়ে মাঝে মাঝে ‘সজন্’র বদলে ‘সে’ এবং তার এই দুটি পদ ব্যবহার করলে ভালো লাগবে।
যেমন-সজন্ আমার বন্ধু। সে গতকাল তার মামাবাড়ি থেকে ফিরেছে। সে বলেছে, তার মামা একজন কবি।
‘সজন্য’ শব্দটি বিশেষ্য। সে তার এই পদ দুটি বিশেষার পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়েছে এবং বিশেষ্যরাই মত কাজ করছে। এই রকম পদকে সর্বনাম পদ বলে।
সংজ্ঞা :- যে পদ বিশেষ্যের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়ে বিশেষ্যের মতো কাজ করে, তাকে সর্বনাম পদ বলে।
সর্বনামপদ এর শ্রেণীবিভাগ
১)পুরুষবাচক সর্বনাম:-
উত্তম , মধ্যম ও পুরুষের যে-কোনো লিঙ্গের যে-কোনো নামের পরিবর্তে ব্যবহৃত সর্বনাম কে পুরুষবাচক সর্বনাম বলে। যথা—আমি, আমরা, তুমি, তোমরা, সে, তারা, আপনি, আপনারা, তুই তোরা, তোকে, এ ও. তিনি, তারা,তাদের, যাঁকে, কেউ ইত্যাদি।
) নির্দেশক সর্বনাম:- যে পদ কোনো বিশেষ্যের পরিবর্তে বসে বিশেষজভাবে এই বিশেষকে নির্দেশ করে, তাকে নির্দেশক সর্বনাম বলে।যথা- এটা এগুলির চেয়ে ভালো। এই দেখা যায় মরা নদীর সোঁতা। ওটা আমাদের বাড়ি।
) সম্বন্ধ বাচক সর্বনাম:-
যেএসেছে তাকে ডাকো। যার কথা বলেছে তারা তোমার বন্ধু। প্রথম বাক্যে 'যে পদটি যে বান্ধিকে বোঝাচ্ছে, তাকে' পদটিও তাকেই বোঝাচ্ছে। অর্থাৎ দুটি পাদের মধ্যে এমন সম্বন্ধ রয়েছে যে, একটি ব্যবহার করালে আর একটি ব্যবহার করতে হবে। দ্বিতীয় ববাক্যেও যারা এবং "তারা", এই দুটির মধ্যে এমন সম্বন্ধ আছে যে, একটি বসলে অপরটিকেও বসতে হবে একটি যেন অপরটির জন্য অপেক্ষা করে আছে। এই ধরনের জোড়া সর্বনামকে সম্ববাচক সর্বনাম অথবা সর্বনাম বলে।
সংজ্ঞা:- যেসব সমসাম একটি প্রাণী বা বস্তুকে বোঝাবার জন্যে অন্য একটি সর্বনাম পদের সঙ্গে সমন্ধ রেখে জোড়া হিসেবে ব্যবহৃত হয় সেগুলিকে সম্বন্ধবাচক সর্বনাম না সাপেক্ষ সর্বনাম বলে।
অনিশ্চয়বাচক সর্বনাম:-
কারা যেন নিম্নস্বরে কথা বলছে। কেউ সেদিন এল না।এই বাক্য দুটিতে "কাবা, “কেউ ইত্যাদি পদ নিশ্চিতভাবে কাউকে বোঝাচ্ছে না। তাই এ ধরনের পদকে অনিশ্চয়বোধক সর্বনাম বলে।
সংজ্ঞা:- যে সব পদ নিশিতভাবে ফাউকে বা বোঝাচ্ছে না।তাই এ ধরনের পদকে অনিশ্চয় বোধক সর্বনাম পদ বলে।
এরকম আরও দৃষ্টান্ত কারো (কাহারও), সবাই অনেকে, কিছু, কিছুই, অপর, সকলে, যে-কোনে ইত্যাদি।
পারস্পরিকসার সর্বনাম
সময় ও রাখেন পরতে ভালোবাসে। সীমা ও শিখা একে অপরকে ছাড়া থাকতে পারে না। এরকম বাক্যে 'পরস্পর' 'একে অন্যকে এইসব জোড়াপদ পারস্পরের সম্বন্ধ বুঝিয়ে ব্যবহৃত হয়েছে। এগুলিকে তাই পারস্পরিক সর্বনাম বলে।
সংজ্ঞা:- * যে সব সর্বনাম পরস্পরের সময় বুঝিয়ে জোড় বেঁধে ব্যবহৃত হয়, তাদের পারস্পরিক সর্বনাম বলে।
আরও দৃষ্টান্ত – আপনা-আপনি, নিজে নিজেই, আপআপনি-আপনি।
দৃরতাসূচক সর্বনাম:-
তিনি নিজে একথা বলেছিলেন। এটি খোদ বড়কর্তার আদেশ। বাক্যে দুটিতে 'নিজে` `খোদ' এসব সর্বনাম দৃঢ়তা বা নিশ্চয় বুঝিয়ে ব্যবহৃত হয়েছে। তাই এরকম সর্বনামকে বলে দৃঢ়তাসূচক সর্বনাম।
সংজ্ঞা:- দৃঢ়তা বোঝাবার জন্য যে সব সর্বনাম ব্যবহৃত হ্য়, সেগুলিকে দৃঢ়তাসূচক সর্বনাম বলে।এই ধরনের আরও দৃষ্টান্ত– আপনিই, নিজেই, নিজেরাই।
  প্রশ্নবোধক সসর্বনাম
একথা কে বলেছে? কী খেয়েছ? কারা গেছিল? কাকে দিয়েছ? এই বাক্যগুলিতে কে, কী ইত্যাদি পদ প্রশ্ন বোঝাচ্ছে এবং কোনো প্রাণী বা বস্তু সম্বন্ধে ইঙ্গিত দিচ্ছে। এগুলিকে প্রশ্নবোধক সর্বনাম বলে।
সংজ্ঞা:-# কে, কী, কারা, কাকে—এ ধরনের পদ প্রশ্নবোধক বাক্যে ব্যবহৃত হলে এগুলিকে প্রশ্নবোধক সর্বনাম বলে।
  [দ্রষ্টব্য : প্রশ্নবোধক বাক্যে ব্যবহৃত না হলে কে, কী, কারা, কাকে এসব পদ অনিশ্চয়বোধক সর্বনামরূপেই ব্যবহৃত হয়। যথা, কে যেন এসেছে। কী যেন বলে গেল। কারা যেন যাচ্ছে। কাকে যেন বইটা দিয়েছি।
] আত্মবাচক সর্বमাম
: নিজেকে এজন্য দায়ী করছি। এতে আঘাত পেয়েছে তারা নিজেরা।এসব ক্ষেত্রে প্রতিটি বাক্যে 'নিজ' পদটি বাক্যের কর্তাকেই বুঝিয়েছে। (প্রথম বাক্যে 'আমি', দ্বিতীয় বাক্যে 'তারা' কর্তা।) এই ধরনের বাক্যে 'নিজ' পদটিকে তাই আত্মবাচক সর্বনাম বলা হয়।
সংজ্ঞা:-নিজ এই পদটি যদি বাক্যের কর্তাকে বোঝায়, তবে সেটিকে আত্মবাচক সর্বনাম বলে।
যৌগিকগিক সর্বনাম:-
এটা-ওটা না বেছে, যে কোনো একটি নাও। এরা ওরা কী বলছে, সেদিকে ভ্রুক্ষেপ কোরো না। প্রথম বাক্যের 'এটা' বা 'ওটা' দুটিই নির্দেশক সর্বনাম। দুটি সর্বনাম একসঙ্গে যুক্ত হয়ে ব্যবহৃত হয়েছে। দ্বিতীয় বাক্যেও 'এরা' এবং 'ওরা' এই দুটি পদের যোগের ফলে এরা-ওরা' পদটি গঠিত হয়েছে। এরকম যুক্ত সর্বনাম পদকে যৌগিক সর্বনাম বলে। এরা ওরা-তারা' পদটিও যৌগিক সর্বসর্বনা।
সংজ্ঞা:- দুটি বা তার বেশি সর্বনাম যুক্ত হয়ে গঠিত সর্বনাম পদকে যৌগিক সর্বনাম বলে। আরও দৃষ্টান্ত—কেউ-কেউ, যে-যে, যারা যারা, যে-সে [যে-সে গালাগালি দেবে, তাই সহ্য করতে হবে?], তুমি-আমি ইত্যাদি। সুতরাং মোট ন-প্রকার সর্বনামের পরিচয় পাওয়া গেল (১) পুরুষবাচক (২) নির্দেশক (৩) সম্বন্ধবাচক বা সাপেক্ষ (৪) অনিশ্চ্যাবোধক (৫) পারস্পরিক (৬) দৃঢ়তাসূচক (৭) প্রশ্নবোধক (৮) আত্মবাচক (৯) যৌগিক।


ক্রিয়া :-
 বাক্যের মধ্যে যে পদ কোনো কাজ করা বোঝায়, সেই পদকে ক্রিয়াপদ বলে। যথা- রমেশ যাচ্ছে। সুতপা হাসছে। এই দৃষ্টান্ত দুটিতে যাচ্ছে এবং হাসছে ক্রিয়াপদ কারণ র পদই কোনো না কোনো কাজ করা বোঝাচ্ছে।

সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়া
“সে এই কথা বলে’ (অর্থাৎ বলিয়া)—এভাবে একটি অংশ লিখলে মনের ভাব সম্পূর্ণ প্রকাশ পাবে না। এখানে ‘বল্’ ধাতুর সঙ্গে ‘এ’ এই বর্ণ যুক্ত হয়েছে; যুক্ত হয়ে ক্রিয়ার একটি রূপও প্রকাশ করেছে। কিন্তু এই ক্রিয়া বাক্য সমাপ্ত করতে অর্থাৎ শেষ করতে পারেনি। এ-রকম আরও অনেক দৃষ্টান্ত দেওয়া যায়। যথা—কলাগ আমাকে একথা বলতে
“বইটি তোমার কাছে থাকলে—‘
উপরের দৃষ্টান্তগুলির প্রতি লক্ষ করলে দেখা যাবে, ‘বলতে’, ‘থাকলে’, ইত্যাদি ক্রিয়া বাক্য সমাপ্ত করছে পারেনি। এগুলি অসমাপিকা ক্রিয়া।
সংজ্ঞা
• যে সব কিয়া বাক্য সমাপ্ত করতে পারে না, সেগুলিকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে।

উপরের বাক্যগুলিকে এবার সমাপ্ত করা যাক। কল্যাণী আমাকে একথা বলতে চেয়েছিল।
বইটা তোমার কাছে থাকলে দিয়ো।
‘চেয়েছিল’, ‘দিয়ো” এগুলি বিভিন্ন ধাতুর সঙ্গে ক্রিয়া-বিভক্তি যোগের ফলে গঠিত হয়েছে। এই ক্রিয়াগুলি বাক্য সমাপ্ত করেছে। এগুলি সমাপিকা ক্রিয়া।
সংজ্ঞা:-যে সব কিয়া থাকা সমাপ্ত করে, সেগুলিকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে।
ধাতুর সঙ্গে ক্রিয়া-বিভক্তি যুক্ত হয়ে সমাপিকা ক্রিয়া গঠিত হয়।
সর্ম্পক ও অকর্মক ক্রিয়া
৫° যে সব ক্রিয়ার কর্ম থাকে বা থাকতে পারে, তাদের সকর্মক ক্রিয়া বলে।
যথা—ইন্দ্রাণী বই পড়ছে। এক্ষেত্রে বই কর্ম : সুতরাং পড়ছে ক্রিয়াটি সকর্মক এইরকম, শান্তি আম পাড়ছে। স্বপন ডাব খেয়েছিল। এইসব ক্ষেত্রে ‘পাড়ছে’, ‘খেয়েছিল’, এইগুলি সকর্মক ক্রিয়া, কারণ এগুলির কর্ম আছে।
সংজ্ঞা:-
 যে সব ক্রিয়ার কর্ম থাকে না বা থাকতে পারে না, সেগুলিকে অকর্মক ক্রিয়া বলে।
যথা— দেবাশিস হাসছে।
এই বাক্যটির ক্রিয়াপদ ‘হাসছে’-র কোনো কর্ম নেই। “কী হাসছে?’ কাকে হাসছে?’ এসব প্রশ্ন করলে
কিছুই উত্তর পাওয়া যায় না।
ক্রিয়ার কাল
‘পরশু সে চলে গেল।‘—এই বাক্যটি থেকে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে যে, চলে যাওয়ার ঘটনা আগে অর্থাৎ
অতীতে ঘটেছে।
সে আমার বাড়ি যেত।‘—এ বাক্যটি থেকে বোঝা যাচ্ছে, যাওয়া কাজটি অতীতে হত। যদি বলা যায়, ‘সুমন আমার বাড়ি যাচ্ছে’, অথবা ‘মেনকা পড়তে বসেছে’, তবে ‘যাচ্ছে’ ‘বসেছে, এইসব
ক্রিয়াপদের দ্বারা বোঝা যাবে যে, সব কটি কাজ এখন বা বর্তমানের।
শিপ্রা বিকালে আসবে।‘—এই বাকা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, আসা কাজটি আগের ব্যাপার নয়,
বর্তমানেরও নয়; এটা পরে অর্থাৎ ভবিষ্যতে ঘটবে।
 সুতরাং এই আলোচনা থেকে দেখা যাচ্ছে যে, ক্রিয়ার আকৃতি দ্বারা অতীতের, বর্তমানের এবং ভবিষ্যতের সময় বুঝতে পারা যায়।
অর্থাৎ ক্রিয়া যে সময় ঘটে, তাকে ক্লিয়ার কাল বলে।
ক্রিয়ার কাল তিন প্রকার অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ।
* বর্তমান কাল:- যে ক্রিয়াটি বর্তমানে সম্পাদিত হয়, সেই ক্রিয়ার সময়কে বর্তমান কাল বলে। যেমন
(ক) কেনারাম মাছ ধরে।
(ঘ) স্কুলে ছুটির ঘণ্টা পড়েছে।
(খ) ছাত্র-ছাত্রীরা খেলিতেছে।
(ঙ) চন্দ্রিপিয়া গিয়াছে।
(গ) হাঁড়িচাচা পাখি ফড়িং ধরছে। (চ) ভিতরে এসো।
* অতীত কাল:- যে ক্রিয়াটি অতীতে সম্পাদিত হয়েছিল, সেই ক্রিয়ার সময়কে অতীত কাল বলে।
যেমন
(ক) মানিকবাবু বাড়ি গেল।
(ঘ) অনুষ্ঠানে সবাই এসেছিল।
(খ) পাড়ার ছেলেরা খেলা করছিল।
(গ) পূর্ণির মা ঝগড়া করিতেছিল।
(ঙ) রামুর মুখে তোমার খবর শুনিয়াছিলাম। (চ) সকাল সন্ধে মন্দিরে পুজো হত।
* ভবিষ্যৎ কাল : যে ক্রিয়াটি ভবিষ্যতে বা পরবর্তী কালে অনুষ্ঠিত হবে বা ঘটবে, সেই ক্রিয়ার
সময়কে ভবিষ্যৎ কাল বলে। যেমন
(গ) সে ছবি আঁকিয়া থাকিবে।
(ক) তুমি শুধু কথা শুনিতে থাকিবে।
(খ) তিনি বক্ বক্ করতে থাকবেন।। (ঘ) ঈশ্বর তোমার মঙ্গাল করিবেন।
প্রত্যেকটি কালকে আবার কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়।
বর্তমান কালের চারটি
(১) সাধারণ বর্তমান, (২) ঘটমান বর্তমান, (৩) পুরাঘটিত বর্তমান, (৪) ব্যাপ্তি-বাচক ঘটমান বর্তমান।
(১) আমি পড়ি। (২) আমি পড়ছি।
(৩) আমি পড়েছি।
(৪) আমি দু-দিন ধরে পড়ছি।
উপরের চারটি বাক্য পড়ার কাজটির চারটি ভিন্ন সময় বোঝাচ্ছে। প্রথম বাক্যে ‘পড়ি’ এই ভাব প্রকাশ করছে যে, আমি সচরাচর পড়ার ক্রিয়াটি করে থাকি। বর্তমান সময়ে যা সচরাচর ঘটে, তা সাধারণ বর্তমান। আরও উদাহরণ : আমরা ভাত খাই। সে ছবি দেখে। তারা এই ঘরে থাকে।
২.‘আমি পড়ছি’ বললে এই ভাবটিই প্রকাশ পায় যে, আমার পড়ার কাজটি এখন চলছে। যা এখন চচলছ বোঝায় তা ঘটমান বর্তমান। ক্রিয়াপদটির শেষে সাধারণত ‘ছি’, ‘ছে’, ‘ছেন’, ‘ছ’ ইত্যাদি থাকে। যেমন- আমি হাসছি। সে হাসছে। তিনি হাসছেন। তুমি হাসছ। আপনারা হাসছেন।
তৃতীয় বাক্যে ‘আমি পড়েছি’ এই ভাবটি প্রকাশ করছে যে, আমার পড়ার কাজটি শেষ হয়েছে। বর্তমান সময়ে যে কাজটি সমাপ্ত হয়েছে বোঝায়, তা পুরাঘটিত বর্তমান। ব্রিয়ার শেষে সাধারণত
‘-ছি’,’-ছে’, ‘-েছেন’, ‘-েছ’ ইত্যাদি থাকে। যেমন—আমি শিখেছি, আপনি শিখেছেন, তুমি শিখেছে, আপনারা শিখেছেন।
চতুর্থ বাক্যের ভাবটি হল আমার পড়ার ক্রিয়াটি বহুক্ষণ ধরে চলেছে। যে কাজ বহুক্ষণ ধরে চলছে বোঝায় তা ব্যাপ্তি-বাচক ঘটমান বর্তমান। এক্ষেত্রে “ধরে’, ‘যাবৎ’, ‘থেকে অবধি ইত্যাদি শব্দ থাকে। যেমন—তিন দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। এক মাস যাবৎ রোগে ভুগছি। পরশু থেকে আজ অবধি। কীর্তন চলছে।
অতীত কাল
অতীত কালকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয় : (১) সাধারণ অতীত, (২) ঘটমান অতীত, (৩) পুরাঘটিত অতীত।
সাধারণ অতীত অতীতে যে-কাজ সাধারণ ভাবে ঘটেছিল, তা সাধারণ অতীত। ক্রিয়ার সঙ্গে এক্ষেত্রে সচরাচর ‘ল’, ‘নাম’, ‘লে’, ‘লেন’ থাকে। (গ) কুনু বেড়াতে গিয়েছিল। (ঘ) আপনারা চোরটিকে দেখেছিলেন।
(ক) আমরা খেলায় জিতেছিলাম। (খ) তুমি তখন এসেছিলে।
গ) ঝুনু বেড়াতে গিয়েছিল। ঘ) আপনারা চরটিকে দেখেছিলেন।
এই বাক্যগুলির প্রতিটি কাজই অতীতে ঘটে গিয়েছিল। তাই ‘জিতেছিলাম’, ‘এসেছিলে”, “গিয়েছিল’’ “দেখেছিলেন” সাধারণ অতীত কাল।
* ঘটমান অতীন : অতীতে যে-কাজ চলছিল বোঝায়, তা ঘটমান অতীত। ক্রিয়ার সঙ্গে সাধারণত
‘ছিল’, ‘চ্ছিল’, ‘চ্ছিলাম’, ‘ছিলেন’, ‘লাম’, ‘লে’, ‘লেন’ থাকে।
(ক) বাস তখন ছুট ছিল।
(খ) আমরা ক্লাসে পিদিমণির কথা শুনছি লাম। (গ) ছেলেরা ফুটবল খেল ছিল।
(ঘ) তোমরা চারটের সময় বেরিয়ে যাচ্ছিলে।
এই বাক্যগুলোর ছোটার কাজ, শোনার কাজ, খেলার কাজ, যাওয়ার কাজ—সবই অতীতে হচ্ছিল। তাই ‘ফুটছিল’, ‘শুনছিলাম’, ‘খেলছিল’, ‘যাচ্ছিলে’ ঘটমান অতীত কাল।
পুরাঘটিত অতীত :-অতীতে দুটো বা তার বেশি ঘটনা ঘটেছিল, সবার আগে যেটি ঘটেছিল, সেটি পুরাঘটিত অতীত।
(ক) আমি জন্মগ্রহণ করার আগে আলফ্রেড নোবেল জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
এই বাক্যে দুটি কাজ অতীতে ঘটেছিল (১) আমি জন্মগ্রহণ করেছিলাম এবং (২) আলফ্রেড নোবেল জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এই দুটো কাজের মধ্যে কোনটি আগে ঘটেছিল। আলফ্রেড নোবেলের জন্মগ্রহণের কাজটি আগে ঘটেছিল। তাই ‘আলফ্রেড নোবেল জন্মগ্রহণ করেছিলেন’ অংশটি পুরাঘটিত অতীত।
(খ) বৃষ্টি নামবার পরে আমি বেরিয়েছিলাম।
এই বাক্যেও অতীতে দুটি ঘটনা ঘটেছিল : (১) বৃষ্টি নেমেছিল, (২) আমি বেরিয়েছিলাম। এই দুটি ঘটনার আগে ঘটেছিল বৃষ্টি নামবার ঘটনাটি। তাই বৃষ্টি নামবার কাজটি পুরাঘটিত অতীত।

ভবিষ্যৎ কাল
ভবিষ্যৎ কালের দুটো ভাগই বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয় : (১) সাধারণ ভবিষ্যৎ ও (২) ঘটমান ভবিষ্যৎ। যে ঘটনা ভবিষ্যতে ঘটবে, তাকে ভবিষ্যৎ কাল বলে। কিমার সন্ধ্যে এক্ষেত্রে ‘ব’, ‘বে’, ‘বেন’ থাকে। (ক) বাবা অবসর গ্রহণ কর বেন। (খ) আমরা খেলা দেখতে যাব। (গ) তুমি আমার সঙ্গে দেখা কর বে। এই বাক্যগুলির ‘করবেন, “যাব’, ‘করবে’ ভবিষ্যতে কাজগুলো হবে বোঝাচ্ছে। তাই এরা সাধারণ ভবিষ্যৎ কাল।
ঘটমান ভবিষ্যৰ ভবিষ্যতে যে ক্রিয়া ঘটতে থাকবে, তা ঘটমান ভবিষ্যৎ। (ক) আমি পড়তে থাকব। (খ) লীলা খেলতে থাকবে। (গ) আপনি গল্প বলতে থাকবেন। এই বাক্যগুলির ‘পড়তে থাকব’, ‘খেলতে থাকব”, “বলতে থাকবেন ভবিষ্যতে কাজগুলো চলতে থাকবে বোঝাচ্ছে। তাই এরা প্রত্যেকে ঘটমান ভবিষ্যৎ কাল।
ক্রিয়ার কাল সম্পর্কে বলতে গেলে আরো দুটো কাল-এর কথা উল্লেখ করতে হয় (১) ঐতিহাসিক বর্তমান, (২) নিবৃত্ত অতীত। ঐতিহাসিক বর্তমান ।
: “ঐতিহাসিক’ শব্দটি ‘ইতিহাস’-এর বিশেষণ। ইতিহাস মাত্রেই অতীতের ঘটনাকে
বোঝান। কতগুলো ঐতিহাসিক ঘটনা বর্তমান কালের ক্রিয়াপদ ব্যবহার করে লেখা হয়; সেগুলিই ঐতিহাসিক বর্তমান যেমন— (ক) ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়। (খ) বঙ্কিমচন্দ্র নৈহাটিতে জন্মগ্রহণ করেন। (গ) বিশ্বযুদ্ধ বাধে হিটলারের কারণে।
এই বাকাগুলো সবই অতীতে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা বলছে। কিন্তু হয়’, ‘করেন’, ‘বাধে’ বর্তমান কালের ক্রিয়াপদ। এই জাতীয় ব্যবহারকে বলে ঐতিহাসিক বর্তমান।
নিত্যবৃত্ত অতীত : অতীতে কোনো ঘটনা অভ্যাসবশত ঘটত বা সচরাচর ঘটত বোঝালে নিত্যবৃত্ত অতীত কাল হয়। ক্রিয়ার সঙ্গে ‘ড’, ‘তে’, ‘তান’, ‘তেন’ থাকে।
(ক) ছোটোবেলায় আমরা মাঠে বেড়াতাম। (খ) কলকাতায় থাকাকালে তিনি পার্কে বসতেন। (গ) মন্টু ক্লাসে উৎপাত করত। এই বাক্যগুলো অতীতে ঘটে যাওয়া ঘটনা সচরাচর ঘটিত বোঝাচ্ছে। তাই ‘বেড়াতাম’, ‘বসতেন, ‘করত’ নিত্যবৃত্ত অতীত কাল।

অব্যয়
লিঙ্গান্তর করে বা অন্যভাবে বিশেষ্য, বিশেষণ ইত্যাদি পনের পরিবর্তন ঘটানো যায়। যথা— ‘বালক’ থেকে বালকটি, বালকেরা, বালিকা ইত্যাদি পদ সৃষ্টি করা যায়। কিন্তু কতকগুলি পদ আছে যেগুলির রুপের কোনো পরিবর্তন করা যায় না; এগুলিকে অব্যয় বলে।
সংজ্ঞা:- যেসব পদের রূপের কোনো ব্যয় (অর্থাৎ পরিবর্তন) হয় না, সেগুলিকে অব্যয় বলে।
অব্যয়ের কিছু দৃষ্টান্তসহ, কিংবা, পরস্তু, বিনা, নচেৎ, তথাপি, সঙ্গে, ছাড়া, ও, অথবা, কিন্তু, হায়, কী,কি, এবং, আরও, আর, মায়, বনাম, মানে, অর্থাৎ, অথচ, অথবা, নতুবা, নইলে, হ্যাঁ, না, তথাপি, আবার, নয়, বরং, যেরূপ, যেমন, সেরূপ, তেমন, বলিয়া, যেহেতু, এজন্য, জন্য, কিনা, যদিবা ইত্যাদি।

অব্যয়এর শ্রেণিবিভ
অব্যয় প্রধানত দুই শ্রেণির যথা-
(১) অক্ষয়ী (২) অন্বয়ী।
অন্বয়ী অব্যয় দুই শ্রেণির হয়; যথা- পদার্থয়ী এবং সমুচ্চয়ী (বাক্যান্বয়ী)। নীচে পদাদরী, সমুচ্চয়ী এবং অনন্বয়ী অব্যয় সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
পদান্দয়ী অব্যয়
তোমার সঙ্গে যাব না। দুঃখ ছাড়া সুখ হয় না। প্রথম বাক্যের ‘সঙ্গে’ অব্যয় পদটি ‘তোমার’ পদটির সঙ্গে অন্বয় অর্থাৎ যোগসাধন করেছে। দ্বিতীয় বাক্যে “ছাড়া’ অব্যয় পদটি ‘দুঃখ’ পদটির সঙ্গে অন্য সাধন করেছে। তাই এ ধরনের অব্যয়ের নাম পদায়ী অব্যয়।
সংজ্ঞা:- যেসব অব্যয় বাক্যের অন্য পদের সঙ্গে অক্ষয় বা সম্পর্ক প্রকাশ করে, তাকে পদার্থয়ী অধ্যায় বলে।
সমুচ্চয়ী বা বাক্যান্বয়ী অব্যয় : তুমি যাও কিংবা আমি যাব। লোকটি ধনী কিন্তু সং। শ্যামল এবং সমীর দুজনে এসেছে।—এসব দৃষ্টান্তে ‘কিংবা’, ‘কিন্তু’ ‘এবং’ এইসব অব্যয় বিভিন্ন পদ বা বাক্যের মধ্যে অদ্বয় সাধন করেছে। এই ধরনের অব্যাংকে বলে সমুদ্রয়ী অব্যয়।
সংজ্ঞা:- যেসব অবায় বিভিন্ন পদ বা বাক্যের মধ্যে অন্বয় সাধন করে, তাদের সমুচ্চয়ী (বা বাক্যারনী) অব্যয় বলে। [সমুচ্চয় সংগ্রহ]
© অনন্বয়ী অব্যয়
হায়রে আমার কপাল। ছেলেটা ধপাস্ করে পড়ে গেল।
এইসব বাক্যে ‘হায়রে’, ‘ধপাস’ ইত্যাদি যেসব অব্যয় ব্যবহৃত হয়েছে, পদ বা বাক্যগুলির সঙ্গে সেগুলির প্রত্যক্ষ যোগ বা অভয় নেই। তাই এ ধরনের অব্যয়কে বলে অনয়ী অব্যয়।
সংজ্ঞা:- পদ বা বাক্যের সঙ্গে যেসব অব্যয়ের প্রত্যক্ষ যোগ থাকে না, সেগুলিকে অনন্বয়ী অব্যয় বলে।
PDF Download link Click here
My YouTube channel Link Click here
Paritosh Singha




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ